চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বিদেশ পাঠানোর নামে এক প্রতারক দম্পত্তির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খুইয়ে দিশেহারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাংবাদিক মোঃ নাদিম হোসেন। পুর্ব পরিচিত ওই প্রতারক দম্পত্তি পর্তুগাল পাঠানোর নাম করে ওই সাংবাদিকের নিকট হতে ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারিত সাংবাদিক নাদিম থানায় মামলা করলেও এখনো প্রতারক দম্পত্তিকে আটক করেনি পুলিশ।
তবে অভিযুক্ত মহিলা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সাংবাদিক কর্তৃক সদর মডেল থানায় দায়েরকৃত (সদর মডেল থানার মামলা নম্বর-৩৯. তারিখ-২৭/১২/২০২২) এজাহার সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের কৃষ্ণ গোবিন্দপুর গ্রামের কাইঠা পাড়ার এলাকার ফিরোজা আখতার (৪৫) ও তার স্বামী সাংবাদিককে পর্তুগাল পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। যার জন্য মোট সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা দাবি করে প্রতারক দম্পত্তি। তাদের খপ্পরে পড়ে ওই সাংবাদিক তাদের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে কয়েকবারে ৩ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা এবং নগদ ৪ লক্ষ ৮২ হাজার মোট ৮ লক্ষ টাকা প্রদান করে। ৮ লক্ষ টাকা হাতে পাবার পর প্রতারক দম্পত্তি ওই সাংবাদিককে জানায়, যেহেতু বাংলাদেশে পর্তুগালের কোন দুতাবাস নেই, তাই পর্তুগাল যেতে হলে ভারত হয়ে যেতে হবে। সেই কারণে গত বছরের ২৬ মার্চ ওই সাংবাদিককে নিয়ে তারা দিল্লি যায়। কিন্তু দিল্লিতে ৭০ দিন অবস্থান করেও সাংবাদিককে পর্তুগাল পাঠাতে না পেরে তারা সাংবাদিকসহ দেশে ফেরত আসে। কিন্তু অদ্যাবধি ওই প্রতারক দম্পত্তি সাংবাদিককে পর্তুগাল পাঠাতে পারেনি। তাই সাংবাদিক তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তারা নানারকম টালবাহানা করে সময়ক্ষেপন করছে। তাই শেষ মেষ ওই সাংবাদিক নিরুপায় হয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর সদর মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করে। প্রতারিত ওই সাংবাদিক চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার শিবতলা এলাকার মৃত জুলমাত হোসেনের ছেলে নাদিম হোসেন। তিনি এশিয়ান টিভি চ্যানেলের জেলা প্রতিনিধি ও ‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ’ এর নিজস্ব প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। ভূক্তভোগী সাংবাদিক নাদিম দ্রুত এই প্রতারকদের আইনের আওতায় এনে প্রতারণার ৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। ভবিষ্যতে যেন আর কোন ব্যক্তির সাথে প্রতারণা করে পথে বসাতে না পারে এই প্রতারক দম্পতি, সে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবী সর্বস্ব হারিয়ে দিসেহারা সাংবাদিক নাদিম হোসেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফিরোজা আক্তার জানান,
নাদিম ভাইয়ের অনুরোধের প্রেক্ষিতে আমি নোয়াখালির বদরুলের মাধ্যমে পর্তুগালের লইয়ারের কাছ থেকে জেনুইন ওয়ার্ক পারমিট আনিয়েছিলাম। পর্তুগালের লইয়ারের সাথে সরাসরি নাদিম ভাইয়ের যোগাযোগ ছিলো এবং ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ডকুমেন্টসগুলো সরাসরি পর্তুগাল থেকে নাদিম ভাইয়ের দেওয়া ঠিকানায় এসেছিলো।সাথে আরও কয়েকজনেরও ওয়ার্ক পারমিটও এসেছিলো।
তারপর একসাথে দিল্লিতে আসলাম। ফাইল সাবমিশনের জন্য এপয়েন্টমেন্টের প্রয়োজন, সেই এপয়েন্টমেন্টের জন্য একজন ইন্ডিয়ানের সহযোগিতা নেই কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সেই ইন্ডিয়ান চারজনের এপয়েন্টমেন্টের ফিসবাবত একলাখ রুপি নিয়ে গায়েব হয়ে যায়।
পুনরায় আমি নিজের থেকে সবার এপয়েন্টমেন্টের ফিসবাবত টাকা সংগ্রহের চেষ্টায় থাকি এমতাবস্থায় বদরুলের সাথে একহয়ে আমাকে না জানিয়ে নাদিম ভাই ৮০ হাজার রুপি খরচ করে অন্য এক এজেন্টের মাধ্যমে ফাইল সাবমিশন করে আমাকে ফাঁকি দিয়ে।
পরবর্তীতে আমি জানতে পারলাম অন্য যারা ভিসার জন্য নাদিমদের সাথে ফাইল সাবমিশন করেছিলো তাদের ভিসা প্রাপ্তির ইমেইল পেয়েছে। এবং যথারীতি নাদিম ভাইয়ের কাছেও ভিসা প্রাপ্তির ইমেইল গিয়েছে কিন্তু নাদিম ভাইয়ের কাছ থেকে কোন ধরনের রেসপন্স করা হয়নি। আমিও নাদিম ভাইকে অনেকবার অনুরোধ করেছি ইমেইলের জবাব দিয়ে দিল্লিতে এসে ভিসা নেওয়ার জন্য কিন্তু নাদিম ভাই সরাসরি আমাকে মানা করে বলেছেন উনি আর পর্তুগাল যাবেননা।
তিনি সকল ডকুমেন্টস নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়ারও স্বীধান্ত নেবেন বলে জানান।