সর্বশেষ সংবাদ চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাত্রদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা প্রশাসকের প্রেসব্রিফিং এমপিওভূক্ত বে-সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান কর্মসূচী চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডিএনসি’র অভিযান \ ৪০ কেজি গাঁজাসহ আটক-২ আর্ন্তজাতিক বর্ণবৈষম্য দিবস উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানববন্ধন গোমস্তাপুরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বাসায় হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ গোমস্তাপুরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা  সীমান্তে কান্নাকাটির মেলার অনুমতি দেয়নি বিএসএফ পারমাণবিক যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটির উদ্বোধন
Large Add

৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে উদ্বোধন হচ্ছে সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প


কথা ছিল আরও কয়েক মাস আগেই উৎপাদনে যাবে দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। কিন্তু করোনাভাইরাসের দুর্যোগময় মুহূর্তের কারণে প্রবাসী প্রকৌশলীরা কাজে যোগ দিতে না পারায় বিলম্বিত হয়। তবে অবশেষে সব কাজ সম্পন্ন করে উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষা করছে দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি। সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু হলে জাতীয় গ্রিডে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন হয়েছে ময়মনসিংহের চরাঞ্চলে।

দেশে বিদ্যমান বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলা করার লক্ষ্যে ২০২০ সালের মধ্যে চাহিদার ১০ ভাগ বিদ্যুৎ বেসরকারি খাতে উৎপাদনের নিমিত্তে সরকার কর্তৃক নীতিমালা গৃহীত হয়। সেই সূত্র ধরে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নিমিত্তে এগিয়ে আসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এ প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে প্রতিষ্ঠিত ‘ফার্নেস অয়েল’ চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন পদ্ধতির চেয়ে ‘সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প’ অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব, কম ঝুঁকিপূর্ণ, দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয়। এটি জাতিসংঘের এনার্জিবিষয়ক নীতিমালার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। সরকার ঘোষিত ব্যক্তি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির নীতিমালার আলোকে এইচডিএফসি সিনপাওয়ার লিমিটেড কোম্পানি ময়মনসিংহের সুতিয়াখালী সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে যায়। যদিও ভৌগোলিক অবস্থার দিক থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্পের অবস্থান গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী এলাকায়।

কাগজ-কলমে ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু হলেও প্রকল্পের সরেজমিন কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের শেষের দিকে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাস্তবায়ন চুক্তি এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরের পর জেলার গৌরীপুর উপজেলায় ভাংনামারী ইউনিয়নে ব্র?হ্মপুত্র নদের পাড়ে চরাঞ্চলে ১৭৪ একর জমি ওপর ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের যৌথ উদ্যোগে এইচডিএফসি সিনপাওয়ার লিমিটেড কোম্পানি বাস্তবায়ন করছে। বেসরকারি বিনিয়োগ ও সরকারি তদারকিতে পিডিবির একজন নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পরিবেশবান্ধব এ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

প্রকল্প-সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রকল্পের বর্ধিত মেয়াদ বাড়ানোর পর গত ৩০ জুনের মধ্যেই উৎপাদন শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের কাজে জড়িত চীনা প্রকৌশলীরা নববর্ষের ছুটিতে দেশে যাওয়ায় পর করোনা দুর্যোগের কারণে সময়মতো ফিরে না আসায় সোলার প্লেট বসানো ও সংযোগ প্রদানের কাজ বিলম্বিত হয়। ইতোমধ্যে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সুতিয়াখালী ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে আরও ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এলাকাবাসীর জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করবে প্রকল্পটি।

তবে সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিকূলতা তৈরি হয়। সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সুতিয়াখালী সৌরবিদ্যু প্রকল্পের বহির্বিভাগের অবকাঠামোগত কার্যক্রম ১৩২ কেভিএ ট্রান্সমিশন টাওয়ার নির্মাণ, কেওয়াটখালীর জাতীয় গ্রিড লাইন পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল স্থাপন এবং ওভারহেড ট্রান্সমিশন লাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। অভ্যন্তরীণ স্থাপনা নির্মাণসহ যাবতীয় কাজ শেষ হয়ে এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।

গৌরীপুরের ভাংনামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মফিজুন নূর খোকা বলেন, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটির পুরো জমিই তার এলাকার। শুধু গেট সুতিয়াখালী এলাকায় পড়েছে। প্রকল্পটির নাম তার এলাকায় করার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হলে অবশ্যই সুফল পাবে সবাই। তবে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পাশের গ্রামে অন্তত ৬০০ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। পরিবারগুলোকে যেন বিদ্যুৎ দেওয়া হয় সেই দাবিও জানান তিনি।

দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্পের অধীনে প্রায় সব কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে গ্রিডে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে।

এইচডিএফসি সিনপাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) এম শফিকুল ইসলাম পিএসসি জানান, দেশে চলমান সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় ও মেগা প্রকল্প। সব নিয়মনীতি অনুসরণ করে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটির ফলে স্থানীয়ভাবে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও জানান, সরকারের দেওয়া বর্ধিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন।

Add img sm
Add img sm

আরও পড়ুন

%d bloggers like this: