ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:
অবশেষে দখলমুক্ত হলো সেই পয়ঃনিষ্কাশনের গুরুত্বপূর্ন ক্যানেলটি। দখলের কারনে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি এ শিরোনামে একটি সংবাদ গৌড় বাতার্য় প্রকাশের একমাস পর মঙ্গলবার দিনব্যাপি ভোলাহাট উপজেলা প্রশাসন সদ্য যোগ দেয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। এতে করে দখলবাজদের দখলে হারিয়ে যাওয়া ভোলাহাট উপজেলার পয়ঃনিষ্কাশনের একমাত্র সরকারী ৮কিঃমিঃ ক্যানেল দখলমুক্ত হলো ।
স্থানীয়রা জানায়, সরকারী ৮কিঃমিঃ এ ক্যানেল উপজেলার মহানন্দা নদী হয়ে বজরাটেক, হলিদাগাছী, ইমামনগর, বীরেশ^রপুর, সুরানপুর গ্রামসহ সিংহ ভাগ অঞ্চলের জমে থাকা পানি এ ক্যানেল দিয়ে বিলভাতিয়ায় নিষ্কাশন হতো। কিন্তু এলাকার দখলবাজ প্রভাবশালী থেকে শুরু করে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান সরকারী এ ক্যানেলটি দখলে নিয়ে অস্তিত্ব বিলীন করে ফেলে। সরকারী ক্যানেলটি দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীরা নামে বেনামে দখলে নিয়ে বাড়ী-ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা নিমার্ণ করে ২৪ ফুট প্রস্থ্য ক্যানেলটির ১/২ ফুটের নালায় পরিনত করে ।
ফলে পয়ঃনিষ্কাশন সম্পন্ন ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে রাস্তাসহ আম বাগান, বাড়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে চরম দূর্ভোগের শিকার হতে হতো এলাকাবাসিকে। এলাকার ভুক্তভুগিরা সমস্যার সমাধানে ইতিপূর্বে বার বার স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করে প্রতিকার চেয়ে কোন প্রতিকার পায়নি। এর পূর্বে ১৯৯৩-৯৪ অর্থ বছরে এ ক্যানেলটি সংস্কারের জন্য তৎকালীন গোহালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ও ভোলাহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান চারটি প্রকল্পে প্রায় ৬শত ম্যাট্রিক টন গম বরাদ্দ নিয়ে সংস্করণ করেন। কিন্তু তারপর থেকে ক্যানেলটির উপর কারো কোন নজরদারী না থাকায় চলে যায় দখলবাজদের দখলে। হারিয়ে যায় অস্তিত্ব। শুরু হয় এলাকায় চরম জলাবদ্ধতা। চরম দূর্ভোগে পড়ে এলাকার মানুষ। এ ঘটনায় গৌড় বার্তা সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের এক মাস পর উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ক্যানেলটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়।
এ ব্যাপারে গোহালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, দফায় দফায় নোটিস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কিন্ত গত ১৭ আগষ্ট ভোলাহাট উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মশিউর রহমান যোগদান করে জনস্বার্থে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ক্যানেলটি পূনরুদ্ধার করলেন।
অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মশিউর রহমান জানান, ভোলাহাট উপজেলাকে আলোকিত করতে রাত দিন ও ছুটির দিনেও কাজ করে উপজেলার সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করবেন তিনি। সরকারী জায়গায় কোন অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে কারো সাথে কোন আপস করবে না তার প্রশাসন।
উল্লেখ্য, সদ্য যোগ দেয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার গত এক সপ্তাহ থেকে উপজেলার মেডিকেলমোড়, বড়গাছীবাজার, মুশরীভূজাবাজার, ময়ামারীবাজার, গোহালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ গেট বাজার, ইমামনগরবাজার, ফুটানীবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে রাস্তার প্রশস্ত এবং সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির পাশাপাশি রাস্তার জলাবদ্ধতা দুর করতে দখল হয়ে যাওয়া ক্যানেলটিতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে জলাবদ্ধতা দুর করতে ব্যবস্থা নেন।