নারায়ণগঞ্জ ও ফেনী প্রতিনিধি
ফেনীতে ধর্ষণবিরোধী লংমার্চে হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ধর্ষণের বিরুদ্ধে নয় দফা দাবিতে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে লংমার্চকারীদের ওপর এ হামলা চালালো হয়।
শনিবার ফেনী শহরের শান্তি কোম্পানি মোড় এলাকায় এ হামলা চালায় একদল যুবক।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের শতাধিক কর্মী এ হামলা চালিয়েছে। এমনকি স্থানীয় পুলিশ এ হামলায় সহায়তা করেছে বলেও অভিযোগ করছেন আন্দোলনকারীরা।
নারায়ণগঞ্জের ধর্ষণবিরোধী একক অবস্থানকারী ফারহানা মানিক মুনা বলেন, ‘ফেনীতে সমাবেশ শেষ করে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে বাস ছাড়ার সময় পুলিশ বাসের চাবি কেড়ে নেয়। এ সময় পেছন থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের কর্মীরা বাঁশ-কাঠ নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। বাসের সব কাঁচের জানালা ভেঙে ফেলে। বাসের দরজা বন্ধ করে দেয়ায় ভেতরে আসতে পারেনি। কিন্তু কাঁচ লেগে অনেকে আহত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনো আমরা নিরাপদ বোধ করছি না। এখানকার স্থানীয় নেতাদেরকে পুলিশ শাসিয়ে গেছে। সামনে হাসপাতালে যে নামবো সেখানে হামলা হবে না এমন নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। কারণ পুলিশও আমাদের আটকানোর চেষ্টা করছে। তারা আমাদের ঘেরাও দেয়া অবস্থাতেই এ হামলা হয়। রাস্তায় দুইবার তারা আটকানোর চেষ্টা করেছে।’
পরবর্তীতে পুলিশ ও ডিবির পাহাড়ায় আন্দোলনকারীদের ৭টি বাস নোয়াখালির উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেয়। তবে পুলিশের এ পাহাড়া নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছে আন্দোলনকারীরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নারায়ণগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক ইবনে সানী দেওয়ান বলেন, বর্তমানে আমরা পুলিশ প্রটেকশনে গন্তব্যস্থলের দিকে যাচ্ছি। তবে এ পাহাড়ায় আমরা নিরাপদ বোধ করছি না। তাদের সহায়তায়ই যখন এই হামলা হয়েছে, তখন আমরা আশঙ্কা করছি যে তারা আবারও আমাদের হামলার মুখে ফেলবেন। অথবা তারা নিতান্তই নাটক করছেন। আমাদের বাসে আন্দোলনকারীরা গুরুতর আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে নিতে ভয় পাচ্ছি। এই আহতদের জন্য যারা এখনও পর্যন্ত তুলনামূলক সুস্থ, তাদের আবারও হামলার মুখে ফেলতে চাচ্ছি না।
দুপুর ২টা শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের বাস নোয়াখালির বেগমগঞ্জে প্রবেশ করেছে।
লংমার্চে থাকা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আল কাদরি জয় বলেন, ফেনীতে সমাবেশ শেষে নোয়াখালীর উদ্দেশে বাসে ওঠার সময় লাঠিসোঁটা ইট নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, হামলাকারীদের প্রতিহতের চেষ্টা করেছে পুলিশ। ঘটনার পর লংমার্চে অংশকারীদের নোয়াখালী পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী গণজাগরণ তৈরির লক্ষ্যে শুক্রবার নোয়াখালীর পথে এই লংমার্চ শুরু করে ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’। শনিবার বিকেলে নোয়াখালী শহরে সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শেষ হবে।