সর্বশেষ সংবাদ রামজানে পণ্যের দাম বেশি নিলে ব্যবস্থা-  ইউএনও শিবগঞ্জ  ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত জেলা হলো  চাঁপাইনবাবগঞ্জ। রহনপুরে পূবালী ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন সোনামসজিদে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের স্থান জটিলতা নিরসন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাত্রদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা প্রশাসকের প্রেসব্রিফিং এমপিওভূক্ত বে-সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান কর্মসূচী চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডিএনসি’র অভিযান \ ৪০ কেজি গাঁজাসহ আটক-২ আর্ন্তজাতিক বর্ণবৈষম্য দিবস উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানববন্ধন গোমস্তাপুরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বাসায় হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ
Large Add

৭ বছর পর পোড়া ক্ষত সারিয়ে অআনুষ্ঠানিকভাবে প্রাণ ফিরেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের একমাত্র পর্যটন মোটেলে

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নির্মাণকাজ শেষে উদ্ধোধনের মাত্র ২ দিন আগে বিরোধী জোটের নাশকতার আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ পর্যটন মোটেলটি । দীর্ঘ সাত বছর পর সংস্কার শেষে আনুষ্ঠিানিকভাবে উদ্ধেধনের কথা থাকলেও নিরবেই অঅনুষ্ঠানিকভাবে পোড়া ক্ষত সারিয়ে প্রাণ ফিরেছে জেলার একমাত্র এই পর্যটন মোটেলে।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মোটেলটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে গেছে। উদ্ধোধন পিছিয়ে গেলেও থেমে নেই মোটেলের কর্মকান্ড। এরই মধ্যে অতিথিদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে মোটেলটি।

জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৩ মার্চ উদ্বোধণের ২ দিন আগে ২৮ ফেব্রুয়ারী জেলার একমাত্র সোনামসজিদ পর্যটন মোটেলটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের দিন আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

একই সময়ে নিহত হন পর্যটন বিভাগের একজন নির্বাহী প্রকৌশলীও। আগুন ও ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় মোটেলটি আর চালু করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও মোটেল এর তথ্য অনুযায়ী, নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পারিসা কনস্ট্রাকশন প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে মোটেলটি নির্মাণ করে। নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর পারিসা কনস্ট্রাকশন এটি পর্যটন করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু তার আগেই দুর্বৃত্তরা মোটেলে আগুন দিয়ে ভবনসহ সব আসবাব পুড়িয়ে দেয়।

সোনামসজিদে ভারতে যাতায়াতের ইমিগ্রেশন ও স্থলবন্দর রয়েছে। এছাড়া বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ও মেজর নাজমুল হকের সমাধি, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের গণকবর, ঐতিহাসিক তাহখানা, কামেল পীর হজরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ (র.)-এর মাজার, ছোট সোনামসজিদ, শাহ সুজার প্রাসাদ, দারসবাড়ির মসজিদ, মাদরাসা, কোতোয়াল দীঘি, টাকশাল দীঘি, দখলদরজা, চামাকাঠি মসজিদ, ধনাইচক মসজিদ, খঞ্জনদীঘির মসজিদসহ অসংখ্য পীর আউলিয়াদের মাজার, বিশাল দীঘি বালিয়াদীঘি সহ বেশকিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা থাকায় এখানে প্রতিদিনই পর্যটক আসেন। পর্যটকদের অত্যাধুনিক সুবিধা দিতেই সরকার এখানে পর্যটন মোটেল নির্মাণ করে। কিন্তু সে স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। এরপর পরিত্যক্ত পড়ে থাকে এটি।

পরবর্তীতে মোটেলটি সংস্কার করে চালু করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মরহুম মো. জাহিদুল ইসলাম। নানামুখি তদবীরের ৫ বছর পর এটি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয় বেসামরিক ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

জেলা সদর থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে সোনামসজিদ ঘুরতে আসা জাহিদ হাসান বলেন, এর আগেও এখানে ঘুরতে এসেছি। তবে ভালোমানের কোন খাবারের দোকান না থাকায় বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসতে হতো। তবে পর্যটন মোটেলের কার্যক্রম শুরু হয়েছে শুনে আবারো ঘুরতে এসেছি। এবার বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসিনি, মোটেলে খেলাম ও খাবার মানও ভালো।

অপরদিকে ঢাকা থেকে আগত ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান বলেন, আগে ব্যবসায়ীক কাজে অনেকবার আসতে হয়েছে সোনামসজিদে কিন্তু এখানে রাত যাপনের কোন ব্যবস্থা থাকায় জেলা সদরে গিয়ে থাকতে হতো। এখানে সব থেকে বড় সমস্যা ছিলো রাতে থাকার। কিন্তু এবার মোটেলে থেকেছি।

তিনি আরও বলেন, দেশের দ্বিতীয় স্থলবন্দর সোনামসজিদে হওয়ায় বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে থাকা ও খাবারের সমস্যায় পড়তেন। কিন্তু এখন মোটেল চালু হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিনের সে সমস্যার সমাধান হয়েছে।

মোটেলের নির্বাহী অফিসার মনোয়ার ফেরদৌস খন্দকার জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধনের কথা থাকলেও তাঁর সিডিউল জনিত কারনে তা সম্ভব হয়নি। তবে পর্যটকদের স্বাথে আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন না হলেও মোটেলটির অআনুষ্ঠানিকভাবে সকল কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

তিনি আরও জানান, তিন তলাবিশিষ্ট পর্যটন মোটেলটিতে রয়েছে ১৮টি ভিআইপি কক্ষ, সাধারণ কক্ষ ১২টি, ইকোনমি কক্ষ ও সাধারণের জন্য ডরমিটরি কক্ষ ১২টি, অভ্যর্থনা কক্ষ একটি, ক্যান্টিন একটি, রান্নাঘর একটি।এছাড়া সার্বক্ষনিক বিদ্যুৎ সুবিধা রাখতে একটি বৈদুতিক সাবস্টেশনও রয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি সংস্কার করা হয়েছে। এটি আধুনিকায়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি এটি দৃষ্টি নন্দন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আগুনে আমাদের প্রায় সবকিছুই নষ্ট হয়ে গেছিলো। এগুলোকে আবারও নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের সকল ফার্নিচার ও অনুসঙ্গিক জিনিসও কেনা হয়েছে।

সদ্য যোগদানকারী চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো: মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, গত মাসের শেষের দিকেই আনুষ্ঠানিকভাবে মোটেলটির কার্যক্রম শুরু হবার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ পর্যটন মোটেল চালুর মধ্যদিয়ে জেলার পর্যটন শিল্প আরও বিকশিত হবে।

Add img sm
Add img sm

আরও পড়ুন

%d bloggers like this: