সর্বশেষ সংবাদ চাঁপাইনবাবগঞ্জে ফেন্সিডিল সহ আটক-১ শিবগঞ্জে স্বাধীনতা দিবস পালিত ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধণা চাঁপাইনবাবগঞ্জে উপজেলা চেয়ারম্যানের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল গোমস্তাপুরে গনহত্যা দিবস উদযাপন  চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডিলারের সহায়তায় টিসিবি পণ্য পাচারের চেষ্টা কালে পণ্য জব্দ : প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পুনরায় বিতরন নাচোলে গণহত্যা দিবস পালিত ভোলাহাটে পুকুরে ট্রাক উল্টে আহত -৫ বর্তমান সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে শিবগঞ্জে লিফলেট বিলি শিবগঞ্জে রমজান উপলক্ষে প্রশাসনের বাজার মনিটরিং শুরু ওসির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী সেই নারীর বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
Large Add

মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সবার জন্য মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে মন্ত্রিসভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০২০ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন অনুমোদন হয়। করোনার কারণে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার গত বছরের একই সময়ের থেকে ১২ শতাংশ কমেছে। এছাড়া বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চলাচলে চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয় থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিসভার সদস্যরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা দেখছি ইউরোপ-আমেরিকায় আবারও করোনাভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নজর দিয়েছেন, সবাই যাতে কেয়ারফুল থাকি, সবাই যেন মাস্ক ইউজ করি। বাকি কি হবে না হবে সেটা আনসার্টেইন বিষয়। মাস্ক যদি আমরা সবাই ব্যবহার করি, তাহলে অটোমেটিক আমাদের ইনফেকটেড হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে। এজন্য মানুষকে আরও বেশি করে সচেতন করতে হবে, অনেকের মধ্যে একটু শিথিল ভাব দেখা যাচ্ছে।’

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত জুলাই মাসের শেষ দিকে বাসার বাইরে সব জায়গায় সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে সরকার। অতি সংক্রামক এই ভাইরাস প্রতিদিনই মানুষের মৃত্যু ডেকে আনলেও নানা অজুহাতে এখনও অনেকে মাস্ক ব্যবহার করছেন না।

পাবলিক প্লেসে কোনোভাবেই মাস্ক ছাড়া যাওয়া যাবে না জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, মসজিদ, জনসমাগম স্থল বা সামনে দুর্গাপূজা আসছে, সেসব জায়গায় কোনোভাবেই কেউ যেন মাস্ক ছাড়া না যান, তা নিশ্চিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভা আশা প্রকাশ করেছেন, সবাই সচেতন হয়ে মাস্ক ব্যবহারে আরেকটু বেশি মনোযোগী হবেন, তাহলে অটোমেটিক্যালি আমরা এটা থেকে একটু রিলিফ পাব। মন্ত্রিসভার নির্দেশনা হচ্ছে, সবাই যেন মাস্ক ব্যবহার করি।’

রোববার কমিশনার সম্মেলন ছিল জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সেখানে আমরা ক্লিয়ার ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিয়েছি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে আমরা বলে দিয়েছে তারা যেন ইমামদের মাধ্যমে প্রতিদিন জোহর ও মাগরিবের নামাজের পর মাইক বা জামাতের সময় বলে দেন। বাজার, মার্কেট বা গণজমায়েত যেখানে হয়, সেসব জায়গায় যেন একটা স্লোগানের মতো থাকে- অনুগ্রহ করে মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করবেন না। মোবাইল কোর্ট ব্যবহারের নির্দেশনা কমিশনারদের দেয়া হয়েছে। যেভাবে যতটুকু সম্ভব মানুষকে সব জায়গায় রিকোয়েস্ট করে, মোটিভেট করে বা ফোর্স করে যদি করতে হয়, আইন প্রয়োগ করতে হলে আইনও প্রয়োগ করবে, অসুবিধা নেই।’

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন : কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার গত বছরের একই সময়ের থেকে ১২ শতাংশ কমেছে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে মন্ত্রিসভার ৪৬ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে। আর গত বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বাস্তবায়ন হয়েছিল মন্ত্রিসভার ৫৮ শতাংশ সিদ্ধান্ত। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের বিরূপ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিদ্যমান অগ্রগতি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা ধীর হলেও আশাব্যঞ্জক।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পুরো কেবিনেট (ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন নিয়ে) সন্তোষ প্রকাশ করেছে, যদিও গত বছরের ?তুলনায় (বাস্তবায়ন) একটু কম আছে। সেক্ষেত্রে বাস্তব অবস্থা তো সবাই বুঝতে পেরেছে। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, কোভিড-১৯ এর জন্য যে কাজ জমে আছে, সেটা যেন খুব কুইকলি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে রিকভার করতে পারি। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভার ২৫টি বৈঠক হয়। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৩টি বৈঠক হয়েছে। ২০১৯ সালে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২৫৮টি সিদ্ধান্ত হয়; এর মধ্যে ২৩৮টির বাস্তবায়ন হয়, বাস্তবায়নের হার ৯২ দশমিক ২৫ শতাংশ। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ১৬৯টি সিদ্ধান্ত হয়েছে; এর মধ্যে ১১৬টির বাস্তবায়ন হয়েছে, বাস্তবায়নের হার ৬৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৩৭টি আইন জারি করা হয়েছে, প্রক্রিয়াধীন আছে ৩৩টি। আর ১৭টি নীতি, কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন হয়েছে। এ সময়ে ১৯টি দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক চুক্তি বা প্রটোকল অনুমোদন বা অনুসমর্থন দেয়া হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রিসভার জন্য ২৯৭টি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উদ্যোগে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১৫টি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে বলে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে মন্ত্রিসভার বৈঠক ও গৃহীত সিদ্ধান্তের সংখ্যা ২০১৯ সালের ওই সময়ের চেয়ে বেড়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বাংলাদেশ-অস্ট্রিয়া সরাসরি ফ্লাইট চলবে : বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চলাচলে চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০১৮ সালের ১৬ মে ভিয়েনায় বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল চুক্তি অনুস্বাক্ষরিত হয়। প্রস্তাবিত চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে একটি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার মূল ভিত্তি হিসেবে পরিগণিত হবে। দু’দেশের মধ্যে বিমান যোগাযোগ স্থাপিত হলে ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রমবাজার, শিল্প, স্বাস্থ্য খাত ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে ইউরোপ ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ সহজতর হবে। ভিয়েনাতে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান কার্যালয় রয়েছে। সেজন্য এটা আমাদের জন্য সেদিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। এটা সম্পূর্ণ ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের যে চুক্তি সে অনুসারে করা হয়েছে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, চুক্তির মূল বিষয়টি হল- উভয় দেশ পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে যাত্রী ও কার্গো ফ্লাইটের সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারবে। চুক্তি অনুস্বাক্ষরের তারিখে একটি সমঝোতা স্মারকের দ্বারা উভয় দেশের মনোনীত বিমান সংস্থা সপ্তাহে সাতটি যাত্রী ও কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। কোনো ধরনের ডিসপিউট (বিতর্ক) হয় তাহলে নিজেরা আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবে। আর যদি না পারে তাহলে আরবিটেশনের সাহায্য নিতে পারবে।

Add img sm
Add img sm

আরও পড়ুন

%d bloggers like this: