সর্বশেষ সংবাদ রামজানে পণ্যের দাম বেশি নিলে ব্যবস্থা-  ইউএনও শিবগঞ্জ  ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত জেলা হলো  চাঁপাইনবাবগঞ্জ। রহনপুরে পূবালী ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন সোনামসজিদে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের স্থান জটিলতা নিরসন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাত্রদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা প্রশাসকের প্রেসব্রিফিং এমপিওভূক্ত বে-সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান কর্মসূচী চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডিএনসি’র অভিযান \ ৪০ কেজি গাঁজাসহ আটক-২ আর্ন্তজাতিক বর্ণবৈষম্য দিবস উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানববন্ধন গোমস্তাপুরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বাসায় হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ
Large Add

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষা অফিসের তদন্ত সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বলে দাবী করেছে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের তদন্তকারী দল।

শিক্ষা অফিসের ্একটি সূত্র জানায়, মাসের ১৯ তারিখে প্রথম তদন্তে দুর্নীতি-অনিয়মের বিভিন্ন অভিযোগের প্রমান মিললেও গত ২৩ সেপ্টেম্বর বুধবার দ্বিতীয় দফায় তদন্ত করে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের আরেকটি তদন্ত দল। এদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করে ৩ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল। অন্যতম তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তাসেম উদ্দীন জানান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত মাসে একটি তদন্ত হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে এলাকাবাসী চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বরাবর একই অভিযোগ করলে বুধবার আবারও তদন্তে আসে অপর একটি দল। এছাড়াও এই তদন্ত দলের অন্য দুই সদস্য হলেন, সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আল মামুন ও মো. দুরুল হুদা।

অন্যদিকে, প্রথম তদন্তে প্রধান শিক্ষক কামরান আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর-উন-নাহার রুবিনা। মুঠোফোনে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এর প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা পাঠানো হয়েছে। এরপর তদন্ত প্রতিবেদন দেখে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। এদিক বারবার তদন্তকে প্রভাবিত করতে নানা অপচেষ্টা অব্যাহত রাখার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এমনকি বুধবার নিজ ভাইসহ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বিদ্যালয় দখল করে প্রধান শিক্ষক কামরান আলী। এসময় যারা অভিযোগ করেছেন, তাদেরকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় সন্ত্রাসী বাহিনী। এছাড়া প্রথমবারের তদন্তেও বহিরাগত বখাটে যুবকদের এনে তদন্ত কাজকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন কামরান আলী। জনমনে প্রশ্ন, তদন্তে অনিয়ম-দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক যুবক বলেন, অফিসকে ম্যানেজ করে নিয়েছে প্রধান শিক্ষক কামরান। তাই কোন ব্যবস্থা না নিয়ে বারবার তদন্ত করছে শিক্ষা অফিস। দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক কামরান আলীর বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, সেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছ। এছাড়াও সহকারী শিক্ষকের সাথে অসদাচরণ ও অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরণের অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক কামরান আলী ও শিক্ষিকা মোর্শেদা পারভীন সীমার বিরুদ্ধে। এর আগে ২০১৫ সালে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় চৌহদ্দীটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ”প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পাহাড়” শিরোনামে খবর প্রকাশ হয়। এসব দুর্নীতির সঠিক বিচার না হওয়ার কারণে নতুন করে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় লোকজনসহ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষিকগনের কিছু অংশ। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের শিশু শ্রেণির উপকরণসামগ্রী ক্রয় বাবদ ১০ হাজার টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করে প্রধান শিক্ষক। ভবন সংস্কার ও সাইনবোর্ড স্থাপনের বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করে কোন খাতে ব্যয় করেছেন তার হিসাব নেই, বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তার খেয়াল খুশিমতো কাজ করছেন। এমনকি তিনি তার মর্জিমতো স্কুলে যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া জাতীয় দিবস, মা সমাবেশের বরাদ্দ ও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক। অভিযোগে আরো জানা গেছে, গত ৬ জুলাই জামায়াত নেতা মুনজুর ইসলামকে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য তৈরি করে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বানাতে মরিয়া হয়ে উঠে প্রধান শিক্ষক। এমনকি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখার প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন পদ্ধতিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠে। কমিটি গঠন পদ্ধতিতে শিক্ষক প্রতিনিধি, জমিদাতা সদস্য, অভিভাবক (পুরুষ) ও অভিভাবক (নারী) নেই। এছাড়া সদস্য নির্বাচন ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি লটারির মাধ্যমে অসদ উপায় অবলম্বন করে সদস্য নির্বাচিত করার চেষ্টা করেন এবং মনোনয়নপত্র বিক্রয়কৃত টাকাও আত্মসাৎ করে প্রধান শিক্ষক। এমনকি উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করায়, যেখানে পাবে খুন করবে বলে হুমকি দেওয়ায়, প্রধান শিক্ষক কামরান আলী এবং তার ভাই আলী ও মো. মোতালেব হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন জমিদাতার ছেলে মো. ইমরুল কায়েস। তবে এসব অভিযোগের কথা অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক কামরান আলী বলেন, আমি কোনো অনিয়ম করিনি। এলাকার কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে যার কোন ভিত্তি নেই।

Add img sm
Add img sm

আরও পড়ুন

%d bloggers like this: