আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি মার্কিন চাপের নিন্দা জানিয়ে পাল্টা প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছেন। ভার্চুয়াল অধিবেশনে রেকর্ড করা বক্তিতায় তিনি বলেন বর্তমান করোনা পরিস্থিতি পুরো বিশ্বকে এক নৌকায় এনে দাঁড় করিয়েছে। খবর আলজাজিরার।
রোহানি বলেন, এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহায়তার বদলে ইরান ইতিহাসের কঠোর অবরোধর মুখে পড়েছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সকল আইন অমান্য করে ইরানের ওপর অবরোধ আরোপ করা হয়। তিনি মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে দেয়া ভাষণে এ মন্তব্য করেন।
প্রেসিডেন্ট রুহানি জাতিসংঘ ভার্চুয়াল অধিবেশনে দেয়া ভাষণে মার্কিন শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ইরান পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করেন। বলেন, একজন প্রতিবাদী পুরুষের সঙ্গে মার্কিন শেতাঙ্গ পুলিশের নৃশংস আচরণের যে চিত্র বিশ্ববাসী দেখেছে তা আমাদের কাছে ছিল চিরচেনা একটি দৃশ্য। ওই কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির ঘাড়ে যে পা রাখা হয়েছিল সেটি আমাদের অতি পরিচিত কারণ, এটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পা যা প্রতিটি স্বাধীনতাকামী জাতির টুটি চেপে ধরে আছে।
ইরান কিছুতেই নতিস্বীকার করবে না মন্তব্য করে দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের জনগণের কষ্ট হচ্ছে ঠিকই কিন্তু স্বাধীনতাবিহীন ও তাবেদারি জীবন এর চেয়ে কষ্টকর। কাজেই ইরান কথিত সর্বোচ্চ চাপের মুখে নতিস্বীকার করবে না।
এদিকে জাতিসংঘ অধিবেশনে চীন-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনকে দায়ী করে বক্তব্য দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যে চলমান উত্তেজনা সামনে চলে এসেছে। বিশ্বে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনকে দায়ী করেছেন ট্রাম্প। খবর বিবিসির।
চীনের প্রেসিডেন্ট শী জিনপিং তার বক্তব্যে বলেছেন, কোন দেশের সঙ্গে স্নায়ু যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা নেই তার দেশের। বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে এই দুই বিশ্ব শক্তির মধ্যে বিরোধ চলছে।
নিউইয়র্কে এই বছরের জাতিসংঘের সম্মেলন মূলত ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে বিশ্ব নেতারা আগে থেকে রেকর্ড করে রাখা বক্তব্য সরবরাহ করেছেন। এর ফলে জাতিসংঘের বড় অধিবেশনগুলোয় ভূ-রাজনৈতিক যেসব চিত্র বা ঘটনা দেখা যায়, তা এবার অনুপস্থিত। প্রতিটি সদস্য দেশের একজন করে প্রতিনিধি অধিবেশনে প্রতিনিধিত্ব করছেন। ফলে এক দেশের সঙ্গ অন্য দেশের বাকযুদ্ধের সীমিত সুযোগ রয়েছে।