স্টাফ রিপোর্টারঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ০৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের ছেলে মো. ইউসুফ আলীর (৪৫) বিরুদ্ধে আবারো আরেক গৃহবধূকে ধর্ষনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে বোয়ালিয়া ইউনিয়নের ঘাটনগর এলাকার মো. ওয়াহিদুল ইসলামের (৩০) স্ত্রী সায়েমা খাতুনকে ধর্ষণ করে ইউসুফ। সায়েমা মাঠে ঘাস কাটতে গেলে প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সুকুদ্দির ছেলে ইউসুফ তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এনিয়ে আদালতে উভয় পক্ষ মামলা করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, ৭-৮ মাস আগেও আরেক গৃহবধূকে ধর্ষনের অভিযোগে ইউসুফ আলীর সালিশ হয়েছে। একই এলাকার তারুল ইসলামের ফাঁকা বাড়ি পেয়ে তার স্ত্রীকে ধর্ষনের চেষ্টা করে ইউসুফ। ওই গৃহবধূর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন আসলে সে পালিয়ে যায়। পরে ধর্ষনের অপরাধে গোমস্তাপুর থানায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা ও ৫০ হাজার টাকা মুচলেকা দিয়ে সালিশ সম্পন্ন হয়।
ধর্ষনের শিকার সায়েমার স্বামী ওয়াহিদুল ইসলাম জানায়, অনেকদিন আগে থেকেই ইউসুফ আমার স্ত্রীকে বিরক্ত করছিলো ও পিছু নিতো। ঘটনার দিন দুপুরে আমার স্ত্রী ঘাস কাটতে গেলে সেদিনও পিছু নেয় এবং ফাঁকা পেয়ে মুখে গামছা বেঁধে ধর্ষণ করে। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে বাসায় এসে স্ত্রীকে দেখতে না পেয়ে মাঠের দিকে খুঁজতে যায়। স্ত্রীর চিৎকারে এগিয়ে গেলে দেখি জোরপূর্বক ধর্ষণ করছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গোমস্তাপুর থানায় অভিযোগ করতে গেলে তা না নিয়ে জানায়, এটি থানায় নেয়া যাবে না। কোর্টে গিয়ে মামলা করেন। পরে এলাকার ২০-২৫ জন ব্যক্তি নিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান লালুর কাছে এর বিচার দাবি করি সেদিন রাতেই। পরে ধর্ষক ইউসুফের পিতা ইউপি সদস্য সুকুদ্দির কাছে জানালে ২১ সেপ্টেম্বর সোমবার সালিশের দিন ধার্য করা হয়। তবে সালিশ করতে চাইলেও ২০ সেপ্টেম্বর রবিবার আদালতে গিয়ে উল্টো সামেয়া ও তার স্বামী ওয়াহিদুল ইসলামের নামে নারী নির্যাতনের মামলা করেন প্যানেল চেয়ারম্যান সুকুদ্দি। পরে ২২ তারিখ মঙ্গলবার ধর্ষণ মামলা করেন ওয়াহিদুল ও তার স্ত্রী।
ধর্ষনের শিকার সায়েমা খাতুন বলেন, অনেকদিন আগে থেকে সে আমাকে বিরক্ত করতো। বিষয়টি তার পরিবারকে জানার পরও তারা গুরুত্ব দেয়নি। আমার সাথে যে অন্যায় হয়েছে, আমি তার বিচার চাই। ঘাটনগর এলাকার এরফানের ছেলে একরাম, বাসেদের মেয়ে নাজমা, একরামের স্ত্রী ফিরকিসহ স্থানীয় আরো কয়েকজন নারী-পুরুষ জানায়, প্যানেল চেয়ারম্যান বাবার ক্ষমতার দাপটে ইউসুফ এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে। একাধিক সংসার ভাঙ্গার কারন এই ইউসুফ। এলাকার মেয়েরা তার জন্য অনিরাপদ ও নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছে। চরিত্রহীন ইউসুফ মেয়েদের দিকে খারাপ নজরে দেখে সবসময়। এসময় সকল গ্রামবাসী তার উপযুক্ত বিচার দাবি করে।
ঘটনার পর ধর্ষক ইউসুফ আলী পলাতক রয়েছে। তবে তার বাবা প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মো. সুকুদ্দির সাথে কথা বলে বিভিন্ন অসংগতি পাওয়া যায়। সালিশের কথা হওয়ার পরেও নিজেদের মামলা কর প্রসঙ্গে তিনি জানান, তারা মামলা করবে শুনে বাঁচতে আমরাও মামলা করেছি। পরক্ষণেই তিনি বলেন, আমার ছেলের বউকে নির্যাতন করেছে তাই মামলা করেছি। যার ভিডিও বক্তব্য রয়েছে প্রতিবেদকের কাছে। তিনি আরো জানান, আমার ও ছেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বারবার ধর্ষনের অভিযোগ করা হচ্ছে। আরো প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আদালতে মামলা হয়েছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। আমি কিছু বলতে পারবো না।
গোমস্তাপুর থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) জসীম উদ্দীন জানান, উভয় পক্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছে। যা পুলিশ তদন্ত করছে।