সর্বশেষ সংবাদ ওসির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী সেই নারীর বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন রামজানে পণ্যের দাম বেশি নিলে ব্যবস্থা-  ইউএনও শিবগঞ্জ  ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত জেলা হলো  চাঁপাইনবাবগঞ্জ। রহনপুরে পূবালী ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন সোনামসজিদে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের স্থান জটিলতা নিরসন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাত্রদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা প্রশাসকের প্রেসব্রিফিং এমপিওভূক্ত বে-সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান কর্মসূচী চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডিএনসি’র অভিযান \ ৪০ কেজি গাঁজাসহ আটক-২ আর্ন্তজাতিক বর্ণবৈষম্য দিবস উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানববন্ধন
Large Add

ইলিশ উৎপাদনে শীর্ষে বাংলাদেশ

ইলিশ উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। সুস্বাদু এই মাছ উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থান আরও মজবুত করেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই উৎপাদিত হচ্ছে বাংলাদেশে। মাত্র চার বছর আগেও এই উৎপাদনের হার ছিল ৬৫ শতাংশ। মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের চলতি মাসের হিসাবে এমনটি জানা যায়।

বাংলাদেশে যে হারে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে সে তুলনা প্রতিবেশী দেশগুলোর উৎপাদন বাড়েনি। ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানে ইলিশের উৎপাদন কমেছে। বাংলাদেশের পরই ইলিশের উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে ভারত। পাঁচ বছর আগে দেশটিতে বিশ্বের প্রায় ২৫ শতাংশ ইলিশ উৎপাদিত হতো। তবে চলতি বছর তাদের উৎপাদন প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশে নেমেছে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা মিয়ানমারে উৎপাদন হয়েছে ৩ শতাংশের মতো। ইরান, ইরাক, কুয়েত ও পাকিস্তানে উৎপাদন হয়েছে বাকি ইলিশ।

ভারতে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুইদিনব্যাপী একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে অন্যতম আলোচনার বিষয় ছিল বাংলাদেশে কিভাবে ইলিশের উৎপাদন বাড়ল। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের ইকোফিশ প্রকল্পের দলনেতা অধ্যাপক আবদুল ওহাব।

অধ্যাপক ওহাবের গবেষণা প্রবন্ধটিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিভিন্ন নদ-নদীতে ইলিশের যে অভয়াশ্রম তৈরি করেছে, তা ধারাবাহিকভাবে এই মাছের উৎপাদন বাড়িয়েছে। ২০১৮-১৯ সালে বাংলাদেশের মৎস্য অধিদপ্তর, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশ যৌথভাবে ইলিশের জিনগত বৈশিষ্ট্য ও গতিবিধি নিয়ে প্রথম একটি গবেষণা করে। তাতে দেখা গেছে, মা ইলিশ যে নদীতে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ইলিশ যেখানে বড় হয়, পরিণত অবস্থায় তারা সমুদ্র থেকে সেই নদীতেই ফিরে আসে। অন্য কোনো নদী বা জলাশয়ে যতই অনুকূল পরিবেশ থাকুক না কেন, তারা জন্মস্থানেই ফিরে আসে। বাংলাদেশে যেহেতু অভয়াশ্রমগুলোয় ইলিশের ডিম পাড়ার হার বেশি এবং বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, তাই সাগর থেকে তারা সেখানেই ফিরে আসছে। ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার মতো দেশগুলো অভয়াশ্রম তৈরি করে মা ও জাটকা ইলিশের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারেনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, মা ও জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ করায় আমাদের এখানে এই সাফল্য এসেছে। ইলিশ বড় হওয়ার জন্য অভয়াশ্রমগুলো বাড়ানো এবং সুরক্ষা দেওয়াও ভূমিকা রেখেছে। ইলিশ ধরার জালের আকৃতি নতুনভাবে নির্ধারণ করায় ভবিষ্যতে আরও বাড়বে ইলিশের উৎপাদন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রতিবছর ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে এই মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এ কর্মসূচিও ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে ওয়ার্ল্ডফিশ, মৎস্য অধিদপ্তর ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এবার শুধু পরিমাণের দিক থেকেই নয়, আকৃতির দিক থেকেও কোনো দেশ বাংলাদেশের ইলিশের ধারে কাছে নেই।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯০ হাজার টন। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৫ লাখ ১৭ হাজার টন। সূত্র জানায়, ২০১৯-২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরে সেই রেকর্ড ভেঙে এখন পর্যন্ত ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ ৩৩ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ গত ১১ বছরের ব্যবধানে দেশে ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৮৬ শতাংশ।

তথ্য অনুযায়ী, ১০ বছর আগে দেশের ২১টি উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যেত। বর্তমানে ১২৫ থেকে ১৩০টি উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দেশে প্রায় ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ইলিশের অভয়াশ্রম। ক্রমবর্ধমান ইলিশ উৎপাদনের এই প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশকে ইলিশ উৎপাদনের রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একই সঙ্গে ইলিশ উৎপাদনেও বাংলাদেশ রয়েছে প্রথম স্থানে।

Add img sm
Add img sm

আরও পড়ুন

%d bloggers like this: